রায়পুরায় বন বিভাগের ২৬ শতাধিক গাছ কেটে অফিসার্স ক্লাব নির্মাণ: সমঝোতার চেষ্টা চলছে
রায়পুরা প্রতিনিধি।
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই সরকারি নার্সারির প্রায় ২৬ শতাধিক শিশু গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইঞ্জিনিয়ার), সমাজসেবা কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গোপনে এসব গাছ কেটে ফেলে একটি নির্জন স্থানে সরিয়ে রাখা হয় এবং সেই স্থানেই উপজেলা অফিসার্স ক্লাব নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। খবর পেয়ে রায়পুরা বন কর্মকর্তা রুবেল আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, বিষয়টি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বন বিভাগের একটি বিশেষ তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানার সঙ্গে আলোচনায় বসে। বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, ইউএনও ক্ষতিগ্রস্ত গাছগুলোর জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করছেন।
তবে ইউএনও’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি। সমাজসেবা কর্মকর্তা জানান, “আমি কিছু জানি না, ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেন।”
ঘটনার পর থেকেই মাধবদী, নরসিংদী ও রায়পুরা এলাকার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অন্তত ২০-২৫ জন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন এবং তথ্য সংগ্রহ করছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের মধ্যে টানাপোড়েনের বিষয়টি এখন রায়পুরায় ‘টপ অফ দ্য টাউন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় পরিবেশবাদী ও সচেতন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা ঘটনাটিকে নিছক গাছ কাটার বিষয় নয়, বরং একটি গভীর প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
পরিবেশ রক্ষায় এমন কর্মকাণ্ড রোধে যথাযথ তদন্ত ও আইনগত পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।