নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার হাতে আহতদের অনুদানের চেক, ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষার্থীরা।
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেটের গোয়াইনঘাটে আলোচিত ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আমিনের হাতে আহতদের জন্য বরাদ্দ সরকারি অনুদানের চেক তুলে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারীর কার্যালয়ে আয়োজিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে আশরাফুল আমিন অনুদানের চেক গ্রহণ করেন। গেজেট নম্বর ১৮৭ ও মেডিকেল কেস আইডি ২৩৪৭২-তে তার নাম অন্তর্ভুক্ত থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, আশরাফুল আমিন ছিলেন ছাত্রলীগের গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটির (নিষিদ্ধ ঘোষিত) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের আব্দুস সুবহানের ছেলে আশরাফুলকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তার নাম বাতিলের দাবি তুলেছেন।
একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আশরাফুল আমিন নিজেরাই আমাদের ওপর হামলা করেছে, এখন সেই ব্যক্তি কীভাবে আহতদের তালিকায় স্থান পেল এবং সরকারি অনুদান গ্রহণ করলো? এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
অভিযুক্ত আশরাফুল আমিন দৈনিক কালবেলা-কে জানান, “২০১৭ ও ২০১৮ সালে দুটি হত্যা মামলায় আসামি হওয়ার পর আমি রাজনীতি থেকে সরে যাই এবং বিদেশে পাড়ি জমাই। ২০২৪ সালের আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমি যোগ দিই। গত ৪ আগস্ট আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হই। আমার শরীরে পাঁচটি গুলি লাগে, যার মধ্যে তিনটি অপারেশনের মাধ্যমে বের করা হয়।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আমি ইচ্ছাকৃতভাবে তালিকায় নাম দেইনি, আমার অবস্থান বিবেচনায় হয়তো কেউ অন্তর্ভুক্ত করেছে।”
এ বিষয়ে ইউএনও রতন কুমার অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, সিলেট জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন বলেন, “আমরা বিষয়টি জানার পর প্রতিনিধি দল নিয়ে গোয়াইনঘাট গিয়েছি। আমরা প্রশাসনের কাছে পরিষ্কারভাবে বলেছি, যারা প্রকৃত আহত, তারাই যেন চূড়ান্ত তালিকায় থাকেন। ভুয়া বা বিতর্কিত কেউ যেন তালিকায় না থাকে।”
শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত ও দোষীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।