বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপন :
সংবাদিক নিয়োগ! আপনি যদি সাংবাদিকতা এবং প্রতিবেদনে অভিজ্ঞ হন এবং ব্রেকিং নিউজ থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য আগ্রহী হন, তবে সম্মানিত সংবাদ সংস্থা তে আপনার জন্য সুযোগ আছে। সংবাদিক মান্যতা এবং প্রতিবেদন ক্ষমতা সাথে জয়েন করুন।
সংবাদ শিরোনাম
রওজা শরীফকে দুধ গোসলের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হলো হযরত গণি শাহ (রঃ ) এর তিন দিনব্যাপী ভক্ত সম্মেলন। দিঘলিয়া প্রেসক্লাবের ক্রীয়া সম্পাদক রানা মোল্লার শিশু কন্যার সুস্থতা কামনা  বালু খেকোদের হামলার মুখে ম্যাজিট্রেট ও সাংবাদিক  দিঘলিয়ায় তারেক রহমানের নির্দেশে দুঃস্হ এতিমদের মাঝে কম্বল বিতরণ।  বিএনপি নেতাদের সাথে আতাঁত করে ইউপি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে পলাতক চেয়ারম্যান যুবলীগ ক্যাডার আনিছুর  বেনাপোলে বিজিবি-বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত আব্দুল আলীমের মরদেহ দীর্ঘ আড়াই বছর পর ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন। নরসিংদী মনোহরদী চালাকচর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ। ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২ ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২

যশোরের বেনাপোল মুক্ত দিবস আজ

যশোরের বেনাপোল মুক্ত দিবস আজ

মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি:-
আজ ৩ ডিসেম্বর, যশোরের সীমান্ত বেনাপোল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিন মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে বেনাপোল, শার্শা এলাকা ছেড়ে পিছু হটতে থাকে পাক বাহিনী এবং তাদের দোসররা। আশ্রয় নেয় শার্শার আমড়াখালি সদর ও পরের দিন আঞ্চলিক সদর দপ্তর নাভারনে।

এর আগে, ডিসেম্বর ২ তারিখ রাতে বেনাপোল বাজার থেকে আড়াই কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম পাশে রঘুনাথপুর গ্রাম ছেড়ে পালায় পাক বাহিনী এবং তাদের দোসররা। আশ্রয় নেয় প্রায় ৩ কিলোমিটার পুর্বে পোড়াবাড়ি নারানপুর মাঠ পাড়ার ব্যাটালিয়ন সদরে। ৩ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে দু‘পক্ষের সম্মুখ যুদ্ধে ও মুহুর্মুহু কামানের গুলিতে তছনছ হয়ে যায় নারানপুরে পাক সেনাদের চৌকি। মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে আগেরদিন পাক সেনারা রঘুনাথপুর ইপিআর ক্যাম্প ছেড়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে বাঁচে।

পাকসেনাদের পিছু হটার খবর পেয়ে বেনাপোলের ওপারে ভারতের বনগাঁর জয়ন্তিপুর থেকে সোজা রঘুনাথপুরের পাশের গ্রাম মানিকিয়ায় ছুটে আসেন মিত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন মিঃ রায়সহ দু‘দেশের উদ্ধর্তন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা। তাদের নির্দেশে ৩ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে দু‘জন মুক্তিযোদ্ধা ৪টি গ্রেনেড নিয়ে রেকি করতে যায় নারানপুর ব্যাটালিয়নের আশপাশে। ক্ষুধায় কাতর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘরে ডেকে নিয়ে ইউসুফ নামের এক লোক পেটভরে খেতে দেয় দুধ মুড়কি আর চিড়ে। খাওয়া শেষে ঘর থেকে নামার সাথে সাথে পাকবাহিনী তাদেরকে ঘিরে ফেলে। জীবন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাশের কোদলা নদীতে। মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ্য করে পাকবাহিনী বৃস্টির মত ছুড়তে থাকে গুলি। খবর চলে যায় ২ কিলোমিটার দুরে ৩ প্লাটুন সৈন্য নিয়ে মানিকিয়া গ্রামে অবস্থানরত মিত্র বাহিনীর কমান্ডার মিঃ রায়ের নিকট।

বেনাপোলের ওপারে জয়ন্তিপুরে তখন ৫ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্বে তৌফিক ইলাহী। উনার সাহসিকতায় সেদিন শুরু হয় প্রবল প্রতিরোধ যুদ্ধ। প্রচন্ড গোলাগুলির খবরে ভীত সন্তস্থ পাক বাহিনী পুটখালি, শিকড়ি বটতলা, বেনাপোল কাস্টমস হাউজ এলাকা ছেড়ে রাতের আঁধারে পিছু হেটে আশ্রয় নেয় যশোর-বেনাপোল সড়কের আমড়াখালি কোম্পানির সদর দপ্তরে। এভাবেই শক্রমুক্ত হয় বন্দর নগরী বেনাপোল। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তির আনন্দে উচ্ছ¡সিত মুক্তিযোদ্ধা-জনতার ঢল নামে বেনাপোলে। পাড়া মহল্লায়ও চলে খন্ড খন্ড আনন্দ মিছিল। মুক্তির আনন্দে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে ফেটে পড়ে গোটা বেনাপোলের মানুষ।

সংঘবদ্ধ মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় দ্বিগুন সাহস নিয়ে চলতে থাকে একের পর এক অপারেশন। ৪ ডিসেম্বর শার্শা ও নাভারন এবং ৫ ডিসেম্বর ঝিকরগাছা দখলমুক্ত হয়। আর ৬ ডিসেম্বর মুক্ত হয় যশোর জেলা। এদিন পাকসেনারা ঝিকরগাছা ছেড়ে আশ্রয় নেয় খুলনার শিরোমনি ক্যাম্পে।

এভাবেই ৩ ডিসেম্বর বেনাপোল এবং ৫ ডিসেম্বর ঝিকরগাছা এলাকা দখলদার পাকবাহিনীর কাছ থেকে স্বাধীন হবার গল্প শোনাচ্ছিলেন স্থানীয় দুর্গাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দীন মোহাম্মদ ওরফে দীনো ও বেনাপোল মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ আলম।

বেনাপোলের মুক্তিযোদ্ধা দীন ইসলাম ও শাহ আলম জানান, ৮নং সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেওয়া বীরদের বলিষ্ঠ প্রতিরোধের মুখে বেনাপোল ও শার্শা থেকে শুরু হয়ে সমগ্র যশোর এলাকা শক্রমুক্ত হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত