বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপন :
সংবাদিক নিয়োগ! আপনি যদি সাংবাদিকতা এবং প্রতিবেদনে অভিজ্ঞ হন এবং ব্রেকিং নিউজ থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য আগ্রহী হন, তবে সম্মানিত সংবাদ সংস্থা তে আপনার জন্য সুযোগ আছে। সংবাদিক মান্যতা এবং প্রতিবেদন ক্ষমতা সাথে জয়েন করুন।
সংবাদ শিরোনাম
খুলনার দিঘলিয়া ৩নং ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলনে, উৎসবের আমেজ। রায়পুরা উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের যুবদল নেতার নেতৃত্বে বিএনপি’ নেতার বাড়িতে হামলা। পিছিয়ে পড়া অসহায় অস্বচ্ছল জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে আইনী সহায়তা প্রদান করছে জেলা লিগ্যাল এইড অফিস মধ্যরাতে আগুনে পুড়ল ফার্নিচারের দোকান থানায় অভিযোগ* যশোরের শার্শা উপজেলায় বজ্রপাতে ১ কৃষকের মৃত্যু, নরসিংদীর শিবপুরে গৃহবধূ হত্যা: ১৪ দিনের মাথায় স্বামী-শাশুড়ি গ্রেপ্তার। দিনাজপুরে পুলিশের অভিযানে*_ ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ ১০ জন আটক। নার্সিং ডিপ্লোমাকে স্নাতক করার দাবিতে দিনাজপুরে নার্সিং শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন মাধবদীতে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে ইঞ্জিনিয়ারকে লাঞ্ছিত চাঁদা দাবি: ঠিকাদারি কাজে বাধা। দিনাজপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ কর্তৃক ইজিবাইকের ০৪ টি ব্যাটারী উদ্ধারসহ ০৩ জন কে গ্রেফতার” মোঃ জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি

মাছ কেটে সংসার চালাচ্ছে পলাশের শতাধিক পরিবার

মাছ কেটে সংসার চালাচ্ছে পলাশের শতাধিক পরিবার

মোঃ বেলায়েত হোসেন, পলাশ উপজেলা প্রতিনিধিঃ
কথায় বলে , ভোজন রসিক বাঙালি বা মাছে-ভাতে বাঙালি। এমন বাঙালি পাওয়া যাবেনা মাছ খেতে পছন্দ করেনা কিন্তু মাছ খেতে হলেই কাটতে হবে। এই কাটাকুটি বিষয়টি অনেকের কাছেই ঝামেলা ও বিরক্তিকর। এই সুযোগটা নিয়ে মাছকাটাকে জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে পলাশে অনেকে। কেউ কেউ এটাকে বাড়তি উপার্জনও মনে করছেন। বাড়তি আয় কে না চায়।
পলাশে ছোটবড় বাজারের সংখ্যা ২২/২৩টির মতো।এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি। ঘোড়াশাল বাজার, পলাশ বাজার, খানেপুর বাজার, ডাংগা বাজার, সাধুরবাজার,কালীবাজার, তালতলি বাজার, ওয়াপদা নয়া বাজার,পারুলিয়া বাজার,পাকড়াগঞ্জ,চরসিন্দুর বাজার, সাদ্দাম বাজার, গজারিয়া বাজার,চরনগরদীবাজার উল্লেখযোগ্য বড় বাজার।
প্রতিটি বাজারের মাছ বাজারের পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায় মাছ কাটানীদের। মাছ কেনার পরই এই মাছ কাটানীদের কাছে ছুটে যায় মাছ কেটে দিতে।ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দিচ্ছে।মাছ কাটানীরা বড়মাছ প্রতি কেজি ২০টাকা, ছোটমাছ প্রতিকেজি ৫০/৬০টাকা নিচ্ছে।
সরেজমিনে বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বাজারেই ৭/৮জন তাদের হেল্পারসহ মাছ কাটানী রয়েছে। বাজারগুলোতে সকাল ৪/৫ ঘন্টা বিকেলের বাজারে ৫/৬ ঘন্টা মাছ কাটে। পলাশ- ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চল থাকায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি।

পলাশের বাজারগুলোতে অনেকদিন ধরে মাছ কাটছে হরিদাস দাস,লিটন দাস,আয়ান মিয়া। হরিদাস জানায়,আমরা যারা সকাল বিকেল মাছ কাটি প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত হতে হাজার টাকা ইনকাম করি। সংসারও ভালই চলে।অনেক বেকার ছেলে আগে কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়ে।তারাও ভাল আয় করছে। ঘোড়াশাল বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। জানা যায় এই দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা।
ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়। এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে।

সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা।

পঞ্চাশ উর্ধ বয়সের মাছ কাটানী এক মহিলা আগে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করতো। এখন মাছ কেটে স্বাবলম্বী। আগে বাসা বাড়িতে কাজ করতেন। টাকা জমিয়ে একটি ধারালো বটি কিনে সে মাছ কাটার কাজে নেমে পড়েন। প্রায় চার বছর সে এই পেশায় নিয়োজিত।

শুধুই মাছ কাটা নয়,মাছ কাটার পর মাছে আইঁশ জমিয়ে শুকিয়ে বিক্রি করেও টাকা আয় করছে তারা।

এই পেশায় আয় কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছ কাটলে তার আয় হয় ৪০০/৫০০টাকা। রাত পর্যন্ত করলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। তবে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকার কারণে মাছের চাহিদা বেশি থাকে।চাকুরীজীবীরা এসে বাজার থেকে বেশি বেশি মাছ কেটে বাড়ি নিয়ে যান। এদিন একটু আয় ভালো হয়।

ঘোড়াশাল বাজারে মাছ কাটাচ্ছিলেন এলাকার গৃহিণী। তিনি বললেন, বর্তমানে সন্তানদের লেখাপড়া, স্কুল, কোচিংসহ সংসারের অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপর আবার রান্নাবান্নার কাজ করতে হয়। তাই মাছ কাটার তেমন সময় হয় না। বাড়তি ২০-৩০ টাকা খরচ হলেও সময় অল্প লাগে, ঝামেলা থেকেও বেঁচে যাই।

পাইকসা গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, এখন তো টাকা দিয়েও কাজের মানুষ পাওয়া যায় না। তাই সময় বাঁচাতে বাজার থেকে কেনা মাছগুলো কেটে নিয়ে যাই। বরং তারা না থাকলে অনেক বড় ছোট মাছ খাওয়াই হতো না।

ঘোড়াশাল বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারি বলেন, মাছ কেটেও যে সংসার চালানো যায় এটা একটা সংসার চালানোর এক নতুন উদ্যোগ।তবে আমরা ক্রেতারাও তাদের জন্য উপকৃত হচ্ছি। কারণ অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করে, এতে তাদের সময়টা বেঁচে যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত